আজিকে খোমাখাতায় একখানা প্রশ্নের সম্মুখীন হইলাম; বাঙালি না বাংলাদেশী কোন পরিচয় বেশি গর্বের । উত্তর দিতে গিয়া প্রথমেই মনে আসিল, কেহ জিজ্ঞাসা করিলে, তৎক্ষণে অতিশয় গর্বের সহিতই কহি, বাংলাদেশ হইতে আসিয়াছি আমি ।
বাংলাদেশ শব্দখান অনেকটা আপন গৃহের অনুভূতি দেয় । আবার বাঙালি, বাংলা ভাষাভাষী এইসকল পরিচয়ের রহিয়াছে ভিন্নতর গৌরব-আভিজাত্য ও অনুভূতি ।
ইহা আমাদিগের উৎসের পরিচয় দেয়, ইহা বংশগৌরবের অংশ — কিন্তু ভারতে, আসামে, বিহারে, ত্রিপুরায় ও বাঙালি বাস করিয়া থাকে; ঠোক যেইরূপ ইরাকে, কুয়েতে, মিশরে, কাতারে, সাহারায় সকলেই আরব অথচ তাহাদের পরিচয় ইরাকি, কুয়েতি, মিশরী – ঢালাও ভাবে আরবি নয় । একইরকম, আম্রিকায় অনেক ইংরেজ-বংশধর রহিয়াছে কিন্তু তাহারা ইংলিশম্যান নহে, আবার ব্রিটেনেও থাকেন ইংলিশ, স্কটিশ, আইরিশ, – যাহাদের জাতীয়তা লিখিত হয় ব্রিটিশ । সুতরাং, বলিতে গেলে উভয় পরিচয়ই ভিন্ন ভিন্ন পরিসরে আপন । বাংলাদেশ কহিলে আপন পাড়া, আপন গৃহ মনে হয় – বাঙালি কহিলে আপনার ভাই, না-দেখা আত্মার জন মনে হয় ।
তবুও যদি প্রশ্ন আসিয়াই যায়, কোনটা লয়ে অধিক গর্ব করিবো? কহিব, তবুও সবুজ এই পাসপোর্ট-খানাই না বড্ড বেশি ভালো লাগিয়া থাকে, তবুও বাংলাতেই ভাব জানাইতে-জানিতে মন চায় ।